কর্ম মানে, আপনিই আপনার জীবনের কারিগর।


আপনার জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে, আপনি কিছু না কিছু কার্যকলাপ করেন – শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে, আবেগগত দিক থেকে এবং প্রাণশক্তির নিরিখে। প্রতিটি কার্যকলাপ একটি নির্দিষ্ট স্মৃতি তৈরি করে। একেই কর্ম বলে।
ভক্তি আপনার কর্মকে ধ্বংস করে এবং আপনাকে মুক্তির দিকে নিয়ে যায়।
কর্ম মানে স্মৃতি ও কাজ দুটোই। কাজ না করলে কোনও স্মৃতি তৈরি হয় না এবং স্মৃতি ছাড়া কোনও কাজ সম্ভব নয়।
কর্মের পুরোনো স্তরগুলো আপনার সঙ্গে তখনই এঁটে থাকতে পারে যখন আপনি কর্মের আঠার নতুন প্রলেপ, ক্রমাগত লাগিয়েই চলেন।
কর্মের উৎস ঠিক আপনার কাজ নয়, বরং এটা হল আপনার বাসনা। জীবনে কী করলেন সেটা নয় বরং কোন উদ্দেশ্য থেকে করলেন সেটাই কর্ম সৃষ্টি করে।
নির্দিষ্ট কিছু প্রবৃত্তির মধ্যে দিয়ে কর্ম কাজ করে। কিন্তু একটু সচেতনতা ও একাগ্রতার সাহায্যে, আপনি এটাকে অন্য দিশায় ঠেলে দিতে পারেন।
যত ধরনের কর্ম আছে, তাদের মধ্যে গুপ্তবিদ্যার শক্তিকে ব্যবহার করে নিজের উপকার বা অন্যের ক্ষতি করা প্রয়োগকারীর জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে।
কর্ম অনেকটা পুরোনো রেকর্ডের মতো, ঘুরেফিরে বারবার বেজে চলে। যোগের অর্থ হল পুরোনো জিনিসের বার বার পুনরাবৃত্তি হতে না দিয়ে, জীবনকে এক গভীর সম্ভাবনা ও অভিজ্ঞতায় পরিণত করা।
সচেতন হয়ে করা কাজ 'কর্ম' উৎপন্ন করে না,'কর্ম' উৎপন্ন করে প্রতিক্রিয়া।
শরীরকে ব্যবহার করে আপনি যে কাজই করুন না কেন, সেটা যদি মনপ্রাণ দিয়ে মনযোগ ও আনন্দ সহকারে করেন, তাহলে আপনি একজন কর্মযোগী।

এখানে কোনও কিছুই ঘটনাক্রমে ঘটে না। এই সমগ্র ভৌত অস্তিত্বে কেবল কারণ ও ফলাফল ঘটে চলেছে।

  'কর্ম' মানে "আপনার জীবন আপনারই তৈরি"। কর্মের সঞ্চয়, উপযোগী অথবা বোঝা দুটোই হতে পারে – নির্ভর করে আপনি কোনটা বেছে নেন।

অতীতে যে-ধরণের কর্মই সঞ্চয় করে থাকুন, এই মুহূর্তের কর্মটা সব সময় আপনার হাতেই রয়েছে।

আপনি যাই করুন না কেন, শুধু চেক করুন – সেটা কি সম্পূর্ণ নিজের জন্য করছেন, নাকি করছেন সকলের কল্যাণের জন্য। এটাই খারাপ কর্ম আর ভাল কর্ম নিয়ে আপনার বিভ্রান্তি দূর করে দেবে।

যখন আপনার বোধশক্তি আপনার স্মৃতি দ্বারা কলুষিত হয়ে যায়, তখন সেটা কর্ম। আপনার স্মৃতিই আপনার পূর্ব-নির্ধারিত ধারণার ভিত।

কর্ম আপনার আত্মরক্ষা, কর্ম আপনার বন্ধন। কিন্তু ঠিকভাবে সামলাতে পারলে, কর্ম আবার আপনার মুক্তিও হতে পারে।

কর্মযোগ মানে সেবা করা নয়। কর্মযোগ মানে কাজ করার বাধ্যকারি প্রবৃত্তিকে অতিক্রম করে যাওয়া।

কর্ম মানে পরম দায়িত্ব। এমনকি নিজের জিন বা জেনেটিক্সের দায়িত্বও আপনি নেন।

যদি প্রকৃতই ধ্যানমগ্ন হয়ে ওঠেন, আপনি থাকবেন কর্মের ধরাছোঁয়ার বাইরে।