একজন মানুষ কী করে তার বন্ধনগুলোর থেকে মুক্ত হবেন, যখন তিনি সংসারী এবং পরিবারের বহু মানুষ তার উপর নির্ভরশীল, এবং কিছু শিকল তাকে ঘিরে আছে? সদগুরু উত্তর দিচ্ছেন।

সদগুরু: হতে পারে আপনি শিকল থেকে আপনার শরীরকে মুক্ত করতে পারবেন না, তবে আপনি আপনার মনকে অবশ্যই শিকল থেকে মুক্ত করতে পারেন। সেটা আপনার হাতে আছে, তাই নয় কী? ঠিক এখনই হয়তো আপনি সন্ন্যাস গ্রহণ করে আশ্রমে বাস করতে পারবেন না – আপনার স্বামী, স্ত্রী অথবা আপনার ছেলে মেয়ে আপনাকে অনুমতি দেবেন না, কিন্তু আপনার মানসিক ভাবে মুক্ত হয়ে ওঠার থেকে কেউ কি আপনাকে আটকাতে পারবে? না।

বন্ধনগুলি কেবলমাত্র আপনার নিজের কারণেই আসে, অন্য কারও কারণে আসে না। স্বাধীনতার অর্থ এই নয় যে সব পরিস্থিতিগুলি আমাদের পরিবর্তন করে ফেলতে হবে। মুক্ত হবার জন্যে আমাদের জীবন, অথবা আমাদের পরিস্থিতিগুলিকে এদিক-অদিক করে ফেলতে হবে না, কারণ এক পরিস্থিতি অন্য আরেকটির চেয়ে উচ্চতর নয়; ওরকম কখনও বিশ্বাস করবেন না। এটি কেবল একটি পছন্দমাত্র। কেউ বাঁচার জন্যে এক পরিস্থিতি বেছে নেন, অন্য কেউ আরেক পরিস্থিতি বেছে নেন; সবেরই ভালো মন্দ আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, আপনি নিজের ভিতরে কীভাবে আছেন, তাই না? সুতরাং, আপনি অবিলম্বে আপনার বাহ্যিক পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পারবেন না, হতে পারে এতে কোনও ভুল নেই, এবং এটি পরিবর্তন করার প্রয়োজনও নেই। তবে আপনার নিজের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি পরিবর্তন করা প্রয়োজন, কারণ এটি আপনাকে স্থির হতে দিচ্ছে না।

 

আপনি নিজের গাড়িটি নিয়ে অন্য শহরে পৌঁছে যেতে পারেন, বা সোজা গিয়ে গাছে ধাক্কা মারতে পারেন।এটি আপনার ওপর ছেড়ে দেওয়া আছে।

এই মন ঐশ্বরিক সম্ভাবনার দিকে এক সিঁড়ি হয়ে উঠতে পারে, এটি আপনাকে পরমানন্দে ভরে তূলতে পারে। অনেক সময় এই মন আপনাকে খুশি করেছে, তাই না? এবং অনেক সময় অখুশিও করেছে, ভয় পাইয়েছে, চিন্তিত করেছে, এবং হতাশও করেছে। সুতরাং একই মন দুটোই করছে। এটি যা চায় তাই করছে, কারণ মন নামক এই ছোট্ট যন্ত্রটি আপনার নিয়ন্ত্রণে নেই। এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আপনি নিজের গাড়িটি নিয়ে অন্য শহরে পৌঁছে যেতে পারেন, বা সোজা গিয়ে গাছে ধাক্কা মারতে পারেন।এটি আপনার ওপর ছেড়ে দেওয়া আছে। ব্যাপারটা শুধু এটাই যে আপনি সেটা নিয়ে কী করছেন । আপনি অনেক দূর অবধি পৌঁছাতে পারেন যদি আপনি নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখেন।