পাঁচটি উপায় যা এই ২০২০কে এক দূরদর্শিতা ও অভ্যন্তরীণ স্পষ্টতার বছর করে তুলবে।
নতুন বছরে পা দিতে কি আপনি উচ্ছ্বাসিত ? নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হতে ও নতুন সম্ভাবনার অনুসন্ধান করতে কি আপনি প্রস্তুত? সদগুরুর দেওয়া এই পাঁচটি সাধন সুনিশ্চিত করবে যাতে আপনি স্পষ্টতা ও দূরদর্শিতা দিয়ে নতুন বছরে পদার্পন করতে পারেন ।
#১. তিনটি জিনিস বেছে নিন যা আপনাকে এক চমৎকার মানুষ করে তুলবে।
সদগুরু: সবাই চেষ্টা করতে পারে এক চমৎকার মানুষ হতে। কেউ আপনাকে তা অস্বীকার করতে পারে না। একটি সহজ প্রক্রিয়া আছে যা আপনি এর জন্য করতে পারেন। তিনটি জিনিস লিখুন যা আপনার মনে হয় একটি মানুষকে অসাধারন করে তোলে এবং সেগুলোকে আপনার জীবনে বাস্তবায়িত করুন।অন্যকেউ যা চায় সেটা আপনার করার প্রয়োজন নেই। আপনি যা চান তাই করুন, যেটা আপনার কাছে উচ্চতম- সেটাই করুন। তিনটি জিনিস যা আপনি মনে করেন মানুষকে এক অসাধারন মানুষে পরিণত করে, সেগুলোকে বাস্তবায়িত করুন।
#২. তিনজন আপরিচিত মানুষের দিকে তাকিয়ে হাসুন।
নিজের চারপাশ আলোকিত করতে অবশ্যই রাস্তায় অন্তত তিনজন অপরিচিত মানুষের দিকে তাকিয়ে হাসুন। কেবলমাত্র তাদের দিকে প্রাণখুলে হাসুন। অনুগ্রহ করে এটা করুন আর নিজের চারপাশের জগতে খানিকটা উজ্জ্বলতা নিয়ে আসুন।
#৩.এমন ভাবে বাঁচুন যাতে যখন আপনি মারা যাবেন মানুষ আপনার অভাব অনুভব করবে।
আপনি এখনই হয়তো সবকিছু একসাথে ত্যাগ করতে পারবেন না - আপনার সীমাবদ্ধতা, পূর্বধারণা, এবং যাবতীয় ফালতু জিনিস যা আপনার চারপাশের সবাই ভুগতে হয়। কিন্তু আপনি অন্তত একটি ত্যাগ করে শুরু করতে পারেন। দয়া করে কিছু রূপান্তর ঘটান যাতে করে আপনি যখন বেঁচে থাকবেন, সবাই আপনার সঙ্গ উপভোগ করবে আর যখন আপনি মারা যাবেন, তখন তারা যেন আপনার অভাব অনুভব করে। এরকম ভাবেই আপনার বাঁচা উচিত। যখন আপনি বেঁচে আছেন, আপনার সান্নিধ্য যেন আনন্দদায়ক হয় আর যখন মারা যাবেন তারা আপনার অভাবটা অনুভব করে।
#৪.প্রতি রাতে আপনার মৃত্যু-শয্যায় বসুন :
আমাদের সবার জন্য সময় একই গতিতে বয়ে চলেছে। আপনি ভাবতে পারেন, "আমি সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম", "আমি শপিং করতে গিয়েছিলাম", "আমি ছুটি কাটাতে গিয়েছিলাম"। কিন্তু যদি আপনার শরীরের কথা বলা হয়, সেটি সোজা কবরের দিকে এগোচ্ছে। প্রতিটি পদক্ষেপ , প্রতিটি শ্বাসের সঙ্গে আপনার শরীর কবরের আরও কাছে এগোচ্ছে।
<এটা আতঙ্কিত হওয়ার ব্যাপার নয়। যদি আপনি সচেতন হন যে আপনি মরণশীল তাহলে আপনি এই জীবনটি শ্রেষ্ঠ উপায়ে কাটাতে চাইবেন। যদি আপনি ভুলে যান যে আপনি মরণশীল তাহলে আপনি অদ্ভুত সব কাজ করবেন যার কোনও অর্থ হয় না।
প্রতিরাতে এই সহজ অভ্যাসটি করুন। ঘুমোতে যাওয়ার আগে বিছানায় বসুন এবং ভাবুন -এটা আপনার মৃত্যুশয্যা -আপনার কাছে আর এক মিনিট আছে । ফিরে দেখুন, আপনি যা করেছেন তা সার্থক কিনা। "এখন আমি মরতে চলেছি এবং আজকে আমি যেভাবে ২৪ ঘন্টা কাটিয়েছি, এটা কি সার্থক? আপনি যদি এটা করেন, তাহলে আপনি একটি সার্থক জীবনযাপন করবেন।
#৫. একটু হাল্কা হন, এত মারাত্মক গম্ভীর হবেন না।
বার্ট্র্যান্ড রাসেল একবার বলেছিলেন যে আপনি যদি মনে করতে শুরু করেন যে আপনি যা করছেন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাহলে আপনার ছুটি নেওয়া প্রয়োজন। আপনার গাম্ভীর্য থেকে আপনার ছুটি নেয়া উচিত। গাম্ভীর্য এসেছে মূলত আপনার নিজের প্রতি প্রাধান্যর জন্যে।
কিন্তু দয়া করে বুঝে দেখুন ,এই বিশাল অস্তিত্বের মধ্যে আপনি এক ধূলিকণার মতো। এই বিশাল ব্রহ্মান্ডে সৌরমণ্ডল একটি ক্ষুদ্র কণিকা। যদি এই সৌরমন্ডল কালকে উধাও হয়ে যায়, তাহলে এই মহাবিশ্বে হয়তো কেউ খেয়ালও করবে না। এই ক্ষুদ্র কণার মত সৌরমন্ডলে পৃথিবী গ্রহটি অতিক্ষুদ্র এক কণিকা। এই অতি ক্ষুদ্র গ্রহের মধ্যে যে শহরে আপনি বাস করেন তা আরও - ক্ষুদ্র কণিকা। তার মধ্যে আপনি একজন বড় মানুষ। এটা পরিপ্রেক্ষিতের খুব বড় একটা ভুল।
জীবনটাকে একটু ঢিলা ছাড়ুন। একটু বেশি হাসুন । নিজেকে চারপাশের লোকেজনের সাথে মগ্ন রাখুন। কিছু করুন যা আপনার মনে হয় অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার দরকার নেই। সহজ কাজ করুন। সহজ সরল কাজ করা খুবই জরুরি।
সারা পৃথিবীটা যে স্বাভাবিক ভাবেই আধ্যাত্মিক নয় তার একটা কারণ হল মানুষজন তাদের জীবন সম্পর্কে মারাত্মক রকম গম্ভীর। যদি তারা আরেকটু ঢিলা দিতে পারতেন, যদি তারা জীবনকে আরও আনন্দের সাথে অনুভব করতে পারতেন, যদি তারা এটা দেখতে পেতেন যে তারা নিজেরাই একটা তামাশা, তাহলে তারা হয়তো নিজেদের ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিটা আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে পারতেন। যদি আপনার নিজের ও পারিপার্শ্বিক জগত সম্বন্ধে একটু বেশি স্পষ্টতা থাকে, তাহলে পৃথিবীতে আপনি যাই করবেন, তাতে স্বভাবতই আপনি বেশি সক্ষম হবেন।
Editor’s Note: Let Sadhguru show you how to go beyond New Year’s resolutions.