লকডাউনের পর ভারতের অর্থনীতি

সদগুরু: এই প্রতিকূল সময়ে, এ ব্যাপারে কোন প্রশ্নই ওঠে না যে ব্যাক্তিমানুষ হিসেবে, প্রতিষ্ঠানগুলোতে এবং ছোট ও বড় ব্যবসা- সকল ক্ষেত্রেই কিছু পরিমাণ অর্থনৈতিক ধাক্কা সইতে হবে। কিন্তু এটাই পৃথিবীর শেষ হতে যাচ্ছে না! বছরের পর বছর ধরে যে সকল ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠানগুলি তৈরি হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ সময়ে সেগুলো এতো সহজে ভেঙে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে না।

..কত ভালো ভাবে আপনি আপনার শরীর এবং মস্তিষ্কের ব্যবহার করছেন- সেটাই নির্ধারণ করে জগতে আপনার সাফল্য।

যে প্রভূত পরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি আসবে সেটা আমাদের সহ্য করতে হবে, কিন্তু তা বলে এটা দুঃশ্চিন্তার বা ভয়ের সময় নয়। এ সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য বৈজ্ঞানিক এবং চিকিৎসা শাস্ত্রীয় প্রমাণ আছে, যা দেখায় যে আপনার শরীর এবং মনের কার্যক্ষমতা তখনই সবথেকে বেশি থাকে যখন আপনি আপনার নিজের ভেতর এক মনোরম অবস্থায় থাকেন। আপনি যখন ভয়ে এবং দুশ্চিন্তায় থাকবেন, তখন আপনি আপনার সেরা অবস্থায় থাকবেন না- আপনি অক্ষম হয়ে পড়বেন। সুতরাং আপনার আনন্দময় থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত সংকটকালে। আমরা এই ব্যাপারে আপনাকে সাহায্য করবার জন্য বিভিন্ন রকম সাধন নিবেদন করছি- যেগুলো আপনি অন-লাইনে পেয়ে যাবেন। আপনারা এগুলোর উপযোগ করুন, কারণ আপনি কত ভালোভাবে আপনার দেহের এবং মস্তিষ্কের ব্যবহার করছেন - অনেক ভাবে সেটাই নির্ধারণ করে জগতে আপনার সাফল্য।

ভারতের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে উদ্ভাবনী উপায়

#1 ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভারতের দিকে আকৃষ্ট করা

সদগুরু: যদি আমাদের ভারতীয় বাজার এবং শিল্পকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হয়, তাহলে আমাদের প্রয়োজন দেশের বাইরে থেকে আসা শক্তিশালী বিনিয়োগ। এখন একটা সুযোগ আছে, কারণ অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আমাদের কোন কোন প্রতিবেশী দেশ থেকে বেরিয়ে স্থানান্তর চাইছে, কেননা মানুষের এই অর্থনীতিগুলোর উপর যে আস্থা ছিল- তার গুরুতর অবক্ষয় ঘটেছে। জাপান তো ইতিমধ্যেই কম্পানিগুলোকে স্থানান্তর করার জন্য বেশ কয়েক বিলিয়ন ডলার সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে এবং আমি নিশ্চিত যে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এর থেকেও কড়া পদক্ষেপ নেবে।

বিশ্বের সেরা তিন শতাধিক কম্পানি নতুন বাসস্থান খুঁজছে, পুরোপুরি না হলেও অন্ততপক্ষে আংশিক ভাবে। এটা একটা বিশাল সুযোগ এবং ভারতবর্ষ এই সুবিধা নেবার জন্য এক অসাধারণ অবস্থানে রয়েছে। এর জন্য প্রয়োজন হবে শিল্পমহল, ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠান, এবং অবশ্যই সরকার- সকলের পক্ষ থেকে দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ প্রচেষ্টার। আমি নিশ্চিত যে সরকারও এ ব্যাপারে খুবই সচেতন; কিন্তু এটা আমরা কতটা দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদন করছি এবং কতখানি ব্যাগ্র হয়ে হস্তগত করতে পারছি, সেটাই নির্ধারণ করবে এর সাফল্য। যদি এই 300 টি কোম্পানি ভারতে আসে- এমনকি আংশিক উৎপাদনের জন্যও, এবং আমরা যদি এগুলিকে 28টি রাজ্যে ছড়িয়ে দিতে পারি কিছুটা হলেও, আমরা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারবো। 

#2 আমাদের ডিএনএর ভেতরে থাকা উদ্ভাবনী শক্তির ব্যবহার

সদগুরু: আমরা ভারতীয়রা সর্বদা নিজেরাই নিজেদের পিঠ চাপড়াই- এই বলে যে আমরা খুবই উদ্ভাবনী সমাজ। এটাই আমাদের প্রকৃত উদ্ভাবনী শক্তি দেখাবার সময়। এই বিশ্ব মহামারীই হল সবচেয়ে বড় প্রতিকুলতা যা আমাদের প্রজন্মকে সম্মুখিন হতে হয়েছে, কিন্তু আমরা একে পরাস্ত করতে সক্ষম। দেশ হিসেবে, আমাদের কতগুলো বিশেষ সুবিধে রয়েছে এবং ভৌগলিক রাজনীতিগত ভাবে আমাদের একটা বিশেষ অবস্থান আছে।

Uদুর্ভাগ্যবশত, গত কয়েক দশক ধরে, এশিয়া সমেত বিশ্বের আর্থিক উন্নয়ন থেকে আমরা বাদ পড়ে গেছি। এশিয়া মহাদেশের অনেক দেশ আমাদের থেকে অন্ততপক্ষে পঁচিশ থেকে ত্রিশ বছর এগিয়ে। আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে তাদের সমকক্ষ হওয়ার জনের আমার মনে হয় এই সময়টাই সর্বশ্রেষ্ঠ সম্ভাব্য সুযোগ।

আমরা যে প্রতিকুলতার সম্মুখীন হয়েছি তার জন্য কোন জাদু-দণ্ড নেই। আমরা যে যাই কাজ করি না কেন, তার মূলভিত্তি আমাদের সবাইকেই পুনর্বিচার করতে হবে। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে অনেক নতুন উদ্ভাবনের জন্য। আমরা যে আরামদায়ক মিনারেই চড়ে বসে থাকি না কেন, আমাদের মাটিতে নেমে আসতে ইচ্ছুক হতে হবে এবং অনেক জিনিস পুনরায় উদ্ভাবন করতে হবে।

#3 গ্রামীণ ভারতের পুনর্জীবীকরণ

সদগুরু: পরিসংখ্যান বলছে যে সমগ্র বিশ্বের বিনিয়োগের 72 শতাংশের কাছাকাছি নিয়োজিত আছে বিশ্বের শুধুমাত্র 30 টির মতো শহরে। অন্য অঞ্চলের মানুষজনের সেখানে স্থানান্তরিত হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। ভারতবর্ষে এটা আন্দাজ করা হয়েছিল যে 22 কোটি মানুষ গ্রামাঞ্চল থেকে শহরে স্থানান্তরিত হবে। যদি তাই হয়, তাহলে শহরগুলির দুরাবস্থা আপনি কল্পনা করতে পারেন।

আমরা যদি দেশের সাতশোটির মতো জেলাতে শিল্পকে ছড়িয়ে দিতে সচেষ্ট না হই, এতো বেশি পরিযায়ী মানুষদের সামলানো খুবই কঠিন হয়ে উঠবে।

আমাদের এটা রুখতে হলে, বিনিয়োগকে অনেক বিস্তৃত করতে হবে। এই ম্যানচেস্টারের ধাঁচে শিল্প স্থাপন বন্ধ করতে হবে। ওখানেই শুরু হয়েছিল গন- উৎপাদন প্রণালী, যেখানে সমস্ত কিছু করতে হবে একই জায়গায় এবং প্রত্যেকেই একই জায়গায় আসবে এবং কাজ করবে। কিন্তু সমস্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর কয়েকটি মাত্র শহরে কেন্দ্রীভূত হওয়ার প্রয়োজন নেই। এগুলোর বিস্তারের প্রয়োজন। আমরা যদি দেশের সাতশোটির মতো জেলাতে শিল্পকে ছড়িয়ে দিতে সচেষ্ট না হই, এতো বেশি পরিযায়ী মানুষদের সামলানো খুবই কঠিন হয়ে উঠবে।

এই মুহূর্তে ভারতবর্ষের অর্থনীতি যেন একটা সংকীর্ণ চৌকির উপর বসে আছে- যেটা অর্থনীতি গড়ে তোলার কোন সুরক্ষিত পন্থা নয়। এটাকে বিস্তৃত হতে হবে এবং একমাত্র যে উপায়ে আপনি এটা বিস্তৃত করতে পারবেন সেটা হল -যে কোনও উপায়ে একে গ্রামীণ ভারতে পৌঁছে দিতে হবে। আমি বুঝি যে এটা অনেক বেশি কঠিন, কেননা গ্রামীণ ভারতে প্রতিভা খুঁজে পাওয়া এবং লোকজনদের প্রশিক্ষণ দেওয়া দুরূহ ব্যাপার। কিন্তু আপনি যদি এখন এটা করেন, তাহলে সেটা অনেক বেশি সহজে হবে। আরো দশ বছর পরে যদি আমাদের অন্য আরেক ভাইরাস বা অন্য কিছুর সম্মুখীন হতে হয়, আমরা অনেক ভালোভাবে ওই পরিস্থিতি পার হতে পারবো। 

কৃষিকাজ এবং তার সংশ্লিষ্ট শিল্প একটা বিশাল সম্ভাবনা। 'কৃষিভিত্তিক বনসৃজন', যেখানে প্রচলিত শস্য ক্ষেতের পাশাপাশি বড় বড় গাছ লাগানো হয় - গ্রামীণ অর্থনীতির ক্ষেত্রে রূপান্তরকারী হয়ে উঠতে পারে। আমরা 69 হাজার 760 জন কৃষককে কৃষিভিত্তিক বনসৃজন শুরু করতে সাহায্য করেছি এবং 5-7 বছরের মধ্যে তাদের আয় 300 থেকে 800 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ভৌগলিক অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে যাওয়া চাই আর কৃষি-বনসৃজন সেই পথে এক তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ। 

 

4. কৃষিকার্যে ব্যবসার সুযোগ

সদগুরু: বর্তমানে সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতবর্ষই একমাত্র দেশ যেখানে জনসংখ্যার শতকরা 60 জন এখনও কিভাবে মাটিকে খাদ্যে রূপান্তরিত করা যায়- সেই জাদু জানেন। আমরা বছরের বারোমাসই খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে পারি এবং বিশ্বের প্রায় সকল রকম শস্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রকৃতির মাটি, বিভিন্ন ধরনের জলবায়ু এবং অক্ষাংশের বিস্তার আমাদের দেশে রয়েছে। আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরে যদি আমরা ঠিক ঠিক কাজগুলো করতে পারি, তাহলে আমরা ভারতবর্ষকে সারাবিশ্বের খাদ্যভান্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। আমাদের এদিকে মনোনিবেশ করা দরকার। সেখানেই মানুষের ভবিষ্যত, এতেই ভূমির রক্ষা আর এটাই ভারতবর্ষের সম্পদ। 

5. শিক্ষাক্ষেত্রে পুনর্বিচার

সদগুরু:বহুদিন আগেই শিক্ষা ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনা উচিত ছিল। এই ভাইরাস এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ধন্যবাদ, যে বিদ্যালয়গুলো- আমরা যেভাবে সেগুলোকে জানি, তাদের হয়তো বন্ধ হবার সময় এসে গেছে। 

বর্তমানে শিক্ষা-ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র তথ্য সরবরাহ করা হয়, যেগুলো অনাবশ্যক; কারণ এটা তথ্যের যুগ - সব জায়গাতেই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এর জন্য আপনার পাঠ্যপুস্তক এর প্রয়োজন নেই। শিক্ষকদেরও তথ্য যোগান দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তাদের উচিত প্রেরণা, পূর্ণ মনোযোগ, গবেষণামূলক ভাবনা এবং আরো অনেক রকম জিনিসের যোগান দেওয়া।

আমাদের এমন একটা কাঠামো তৈরি করতে হবে যেখানে আপনি যখন 18 বছর বয়সী হবেন, আপনি হয় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন, নয়তো অবশ্যই আপনার জীবিকা নির্বাহকারী কোন এক রকমের দক্ষতা থাকবে।

বর্তমানে সবথেকে বড় বিপদ হল- আমাদের মধ্যে খুব বেশি সংখ্যক যুবকেরা আছেন, যাদের আচার-আচরণ শিক্ষিতদের মতো, কিন্তু তারা দুই আর দুই যোগ করতেও জানে না। দৃষ্টান্তস্বরূপ, তামিলনাড়ুতে এরকম নিয়ম আছে যে প্রত্যেকটি শিশু দশম শ্রেণী পর্যন্ত উত্তীর্ণ হয়ে যাবে, তা সে তারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হোক আর নাই হোক। এটা ভুল ক্ষেত্রে সহানুভূতি। এই জন্যেই আমাদের অনেক বাচ্চা আছে- যারা কৃষিকার্যে বা অন্য কোনরকম পেশায় যেগুলোতে তাদের বাবারা নিযুক্ত আছেন সেখানে ফিরে যেতে পারে না; কারণ না তারা শারীরিক দিক থেকে যথেষ্ট ভাবে সমর্থ, আর না আছে ফিরে যাবার মনোভাব। কিন্তু তারা নিজেদের শিক্ষিত বলে মনে করেন। বর্তমানে দেশে এরকম লক্ষ লক্ষ যুবক আছেন। এই পরিস্থিতির জন্য অপরাধ, সন্ত্রাস, চরমপন্থা এবং আরো সবকিছু বেড়ে যাবে; কারণ যুবকেরা কোনরকমের দক্ষতা ছাড়াই রাস্তায় রাস্তায় উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

আমাদের এমন একটা কাঠামো তৈরি করতে হবে যেখানে আপনি যখন 18 বছর বয়সী হবেন, তখন আপনি হয় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন, নয়তো অবশ্যই আপনার জীবিকা নির্বাহকারী কোন এক ধরনের দক্ষতা থাকবে। আপনার যদি দুটোর মধ্যে কোনটাই না থাকে, তাহলে আপনাকে সামরিক বা আধা- সামরিক বাহিনীতে বাধ্যতামূলক তালিকাভুক্ত হতে হবে, অথবা এক বছরের দক্ষতামূলক শিক্ষার কোন আবাসিক প্রতিষ্ঠানে। তাদের শারীরিক ও মানসিক ভাবে উপযুক্ত থাকার নিয়মাবলীর মধ্যে দিয়ে যেতে হবে এবং কোন একটা দক্ষতামূলক শিক্ষা নেওয়ার জন্য এবং তাকে সম্পাদন করার জন্য যথেষ্ট নিয়মানুবর্তী হতে হবে।

এর ফলে দেশে প্রভূত পরিমাণে দক্ষতার উন্নতি ঘটবে। প্রত্যেক মানুষের পড়াশোনা করার মানসিকতা থাকে না। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে না। তাদের অন্যান্য দক্ষতা, নতুন উদ্ভাবনা এবং আরও বিভিন্ন রকম জিনিস শিখতে হবে।

শিল্পে দক্ষতার প্রয়োজন। তারা একটু দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে পারে এবং তাদের শিল্পের প্রয়োজন অনুযায়ী দশম শ্রেণীর ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণ দিতে পারে। এর জন্য কিছু পরিমাণ বিঘ্ন তো ঘটবেই, কিন্তু আমাদের এটা মেনে নিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। শুধুমাত্র তখনই আমরা এই নবীন জনসমষ্টির সম্ভাবনার লাগাম খুলে দেব। 

6. আবর্জনাকে সম্পদে রূপান্তর

সদগুরু:: ভারতবর্ষে, হাতেগোনা কয়েকটি শহর ছাড়া বেশিরভাগ শহরই ঠিকমত পরিকল্পিত নয়। শত শত বছর ধরে তারা এলোমেলো ভাবে গড়ে উঠেছে। সেই কারনে বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশন প্রণালী একটা বিরাট সমস্যা। আমাদের যদি এর মোকাবিলা করতে হয়, তাহলে একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো যে গৃহের বর্জ্য এবং শিল্পের বর্জ্যের মধ্যে পরিষ্কার বিভাজন থাকতে হবে।

আজকের দিনে, অনেক রকম প্রযুক্তি আছে- আবর্জনাকে সম্পদে রূপান্তরিত করার। যদি এর কোন অর্থনৈতিক মূল্য থাকে মানুষেরা এর অপচয় হতে দেবে না।

বর্তমানে অনেক দূষণকারী শিল্পের জন্য দেশে একটা আইন আছে যে তাদের নিজস্ব শোধনাগার স্থাপন করতে হবে। এটাই আমার সবথেকে বড় ভুল হয়েছে, কারণ এই শোধনাগারগুলো শুধুমাত্র সরকারি পরিদর্শনের দিনগুলোতে কাজ করবে! এটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ যে একটা শোধন- শিল্প এমনভাবে গড়ে উঠবে, যেখানে আপনার নিষ্কাশিত বর্জ্য হবে আমার ব্যবসা এবং আমার কাঁচামাল। তখন আমি এটা সুনিশ্চিত করব- যেন সবসময় আমার কাঁচামালের যোগান থাকে এবং আমার ব্যবসা হল তাকে শোধন করা। শোধন- শিল্পকে অনেক লাভজনক করা যায়।

আপনি কত জল খরচ করেন অথবা কত বিদ্যুৎ খরচ করেন, সে অনুযায়ী যেমন আপনাকে মাশুল দিতে হয়; তেমনি গৃহের বর্জ্য পদার্থের জন্যও অবশ্যই একটা মাশুল থাকতে হবে- আপনি কতটা বর্জ্য নিষ্কাশন করছেন তার উপর। এটা হতেই হবে, অন্যথায় শোধনের জন্য কোন অর্থ থাকবে না। আজকের দিনে অনেক রকমের প্রযুক্তি আছে- আবর্জনাকে সম্পদে রূপান্তরিত করার। যদি এর কোন অর্থনৈতিক মূল্য থাকে, মানুষেরা এর অপচয় হতে দেবে না। এটাই হতে পারে আবর্জনা থেকে সম্পদের পথে যাত্রা। 

Editor's Note:  Equip yourself to take on any challenge with Inner Engineering Online. Available free of cost for COVID Warriors and at 50% off for everyone else.