বুদ্ধিমান মানুষের খুশি থাকার ধরন
সত্যের সাথে যুবসমাজ শীর্ষক আলোচনাচক্রে জনৈক ছাত্রের প্রশ্ন ছিল, বুদ্ধিমত্তা ও মজা উপভোগ করার মধ্যে কি কোনও বিরোধ আছে ? সদগুরু বলেন, যারা বুদ্ধিবৃত্তির আনন্দে মজে থাকে তাদের কাছে পার্টি বা পাবে যাওয়াটা খুব মজার কিছু নয়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তাদের জীবনে কোনও আনন্দের উপকরণ নেই –
প্রশ্ন: সদগুরু, আমার স্কুল বা কলেজে দেখেছি, বহু বুদ্ধিমান মানুষ আছে যারা নিজে নিজেই আনন্দে থাকতে জানে। সাধারণ মানুষ যেভাবে খুশি থাকে, তারা সেসব নিয়ে ভাবেই না। তারা বেড়াতে যাওয়া, ফূর্তি করা বা পার্টিতে যাওয়া – এসব করার বদলে শুধু নিজেদের কাজ নিয়ে থাকে। বুদ্ধিমত্তা আর খুশি থাকার মধ্যে কি কোনও সম্পর্ক আছে ?
অন্য যে কোনও প্রাণীর ক্ষেত্রে জৈবিক সত্তাই তাদের জীবনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কিন্তু মানুষের রূপ ধরে একবার এসে গেলে, শুধুমাত্র জৈবিক সত্তাই জীবনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে না। যখন তুমি আঠারো বা কুড়ি বছর বয়সে ছিলে, তখন এরকম ভাবনা কাজ করলেও করতে পারে, কিন্তু পরবর্তীকালে তা আর থাকে না। একবার মানুষ হয়ে জন্মেছো মানেই, তোমার মধ্যে এক অপরিসীম বুদ্ধিবৃত্তি সর্বদাই ক্রিয়াশীল। এছাড়াও বস্তুগত বুদ্ধির ঊর্ধ্বে রয়েছে আবেগ ও চৈতন্য। কিছু মানুষ আছে যারা শুধু ভৌত বিষয়ের মধ্যেই সুখের খোঁজ করে। কিছু মানুষ সামাজিক বুদ্ধিমত্তা অথবা তার ঊর্ধ্বে কিছু মাত্রার মধ্যেই সুখ খুঁজে পায়। তুমি যেটাকে মজা করা বলে মনে করো সেটা তারা করছে না মানেই এটা নয় যে, তারা আনন্দে থাকতে জানে না। তুমি যখন দাবা খেলো, তখন কেউ ভাবতেই পারে যে, বোড়ের চাল দিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দেওয়া অর্থহীন। আমি নিশ্চিত জানি, বহু মানুষ ঠিক এভাবেই ভাবে। কিন্তু ওই বোড়ের একটি দুর্দান্ত চাল দেওয়ার মধ্যেই তুমি তীব্র সুখ অনুভব করতেই পারো। সুতরাং, খুশি থাকার ধরন প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে আলাদা হতেই পারে এবং সেটাই হওয়া উচিত। সকলেই যদি একই জিনিসের মধ্যে ঢুকে পড়ে, সেটা মূর্খের সমাজ হয়ে ওঠে।
সম্পাদকের কথা: যে প্রশ্নের উত্তর দিতে সকলেই অপারগ, যদি এমন কোনও বিতর্কিত বা স্পর্শকাতর প্রশ্ন থাকে অথবা যদি কোনও আপাত কঠিন প্রশ্ন নিজেকে ক্রমাগত বিব্রত করতে থাকে, সেক্ষেত্রে জীবনের সব অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার সুযোগ রয়েছে এখানে। সদগুরুকে আপনার প্রশ্ন করুন UnplugWithSadhguru.org.