গণপতির চাতুর্যে রাবণের হার
গণপতি তাঁর চতুরতার জন্য বিখ্যাত। গোকর্ণের মহাবলেশ্বর মন্দিরে গণপতির একটি মূর্তি আছে যার মাথায় একটা টোল- রাবণের দৌলতে, যিনি কোন একটি ঘটনাকালে গণপতির বুদ্ধিমত্তার বড় একটা প্রশংসক ছিলেন না। সদগুরু তাদের দুজনের অপ্রত্যাশিত সাক্ষাতের গল্পটি আমাদের বলছেন।
கோகர்ணா கணபதியின் கதை
రావణుడిని బోల్తా కొట్టించిన గణపతి...!!
তখন রাবণ কৈলাসের নীচে আটকে থাকা হাত নিয়ে শিবের প্রতি তার প্রবল অনুরাগ বর্ষন করতে থাকলেন বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর সব স্তোত্রের মাধ্যমে। তিনি এক হাজার একটি গভীর অনুরাগ এবং আত্মসমর্পণের স্তুতি গীত রচনা করার পর শিব তাকে মুক্ত করলেন এবং বললেন, "তুমি একটি বর চাইতে পারো। আমায় বলো তুমি কি চাও।" আবারও রাবণের স্বভাব বেরিয়ে এলো এবং তিনি বললেন, "আমি পার্বতীকে বিবাহ করতে চাই।" শিব বললেন, "তথাস্তু। পার্বতী এখন মানস সরোবরে আছেন। তুমি সেখানে যেতে পারো এবং তাঁকে বিবাহ করতে পার।" শিবের চারপাশে গণেরা উত্তেজিত হয়ে উঠলো আর ভাবতে লাগলো, "এমনটা কী করে হয়? কেমন করে রাবণ কখনও পার্বতীকে স্পর্শ করতে পারে? এটা সম্ভব নয়।" তারা সবাই ছুটে গেল মানস সরোবরে পার্বতীর কাছে এবং তাঁকে বললো, "রাবণ আসছে। শিব তাকে আপনাকে বিবাহ করার অনুমতি দিয়েছেন।"
পার্বতী ব্যাঙেদের রানী মন্ডুকাকে ডাকলেন এবং এই ব্যাঙটিকে একটি সুন্দরী রমণীতে রূপান্তরিত করলেন। রাবণ কখনো পার্বতীকে দেখেননি এবং তিনি যখন এলেন এবং সুন্দরী মন্ডুকাকে দেখলেন, তখন তিনি তার প্রতি এতই আকর্ষিত হলেন, যে তাকেই বিবাহ করে নিলেন। সেই রমণীই হলেন মন্দোদরী।
এরপর রাবণ একটা খুবই শক্তিশালী সাধনা করলেন এবং স্বয়ং শিবের কাছ থেকে একটা শক্তিশালী জ্যোতির্লিঙ্গ পেলেন। শিব কোনকিছু সামাজিক ভাবে অনুমোদিত কিনা তাতে পাত্তা দেন না। যা কিছু আন্তরিক সততার সঙ্গে ঘটে তার প্রতি তিনি অনুরক্ত হয়ে পড়েন। শিব রাবণকে জ্যোতির্লিঙ্গটি তার রাজ্যে নিয়ে যেতে বললেন এবং আরো বললেন যে তিনি যেখানে জ্যোতির্লিঙ্গটি নামিয়ে রাখবেন, সেখানেই জ্যোতির্লিঙ্গটি চিরদিন থেকে যাবে। একটাই শর্ত ছিল যে রাবণ অন্য কোথাও জ্যোতির্লিঙ্গটি নামিয়ে রাখতে পারবেন না, কারণ তিনি যেখানেই জ্যোতির্লিঙ্গটি রাখবেন সেটি সেইখানেই স্থাপিত হয়ে যাবে।
অতি সাবধানে, দুর্জয় শক্তি দিয়ে রাবণ জ্যোতির্লিঙ্গ নিয়ে যাচ্ছিলেন। এই ব্যক্তি এমন যোগী ছিলেন যে তিনি সবদিক মেনে চলছিলেন - তিনি খান নি, তিনি প্রস্রাব করেন নি, তিনি এমন কোন কিছুই করেননি যা প্রতিটি মানুষের জন্য বাধ্যতামূলক এবং তিনি প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার রাস্তা শুধু হেঁটে ছিলেন কৈলাস থেকে কর্নাটকের গোকর্ণ নামে এক স্থানে। যেহেতু একটা মানুষের যা কিছু সাধারণভাবে প্রয়োজন হয় সে সব ছাড়াই তিনি হাঁটছিলেন তাই তিনি দুর্বল বোধ করছিলেন এবং তিনি প্রস্রাব করতে চাইছিলেন। হয়তো তিনি জল পান করেছিলেন কারণ তিনি কোন খাবার খাচ্ছিলেন না। ততক্ষনে নিশ্চয়ই তার মূত্রাশয়ে ভর্তি হয়ে গেছিল এবং তিনি আর চেপে রাখতে পারছিলেন না! কিন্তু তিনি লিঙ্গ নিচেও নামিয়ে রাখতে পারছিলেন না আবার লিঙ্গ শরীরে ধরে মূত্রত্যাগও করবেন না - এই কাজ তিনি খুব গর্হিত মনে করেন।
তখন তিনি একটা খুব সুন্দর এবং নিস্পাপ দেখতে রাখাল ছেলের দেখা পেলেন। ছেলেটিকে দেখে যথেষ্ট নির্বোধ মনে হল। কোন চালাক লোককে মূল্যবান কিছু ধরতে দিলে সে নিয়ে পালিয়ে যেতে পারে। ছেলেটিকে বেশ বোকা মনে হচ্ছিল তাই রাবণ তাকে বললেন, "আমি তোমাকে একটা রত্ন দেবো যদি তুমি এটাকে কয়েক মিনিটের জন্য তোমার হাতে ধরে রাখো- যতক্ষণ আমি মূত্রত্যাগ করছি। কিন্তু তুমি যেন এটাকে নীচে নামিয়ে রেখো না।" ছেলেটি বলল, "ভালো কথা" এবং তখন রাবণ রাখালটির হাতে লিঙ্গ তুলে দিয়ে মূত্র ত্যাগ করতে পিছন ফিরলেন। এই বালকটি ছিল আসলে গণপতি, যিনি চাননি যে রাবণ লিঙ্গটি লঙ্কায় নিয়ে যান কারণ যদি তিনি নিয়ে যেতেন তাহলে তিনি সম্পূর্ণ ও নিশ্চিত রূপে অতি- মানব হয়ে উঠতেন। তাই গণপতি লিঙ্গটি নীচে নামিয়ে রাখলেন আর সেটা মাটিতে ঢুকে গেল। এমনকি আজকেও যদি আপনি গোকর্ণ যান তাহলে দেখবেন পাথরের উপর একটা ছোট গর্ত আছে যার মধ্যে দিয়ে আপনার আঙ্গুল ঢুকালে লিঙ্গকে অনুভব করতে পারবেন কারণ সেটা ভিতরে ঢুকে গেছে।
রাবণ এতই রেগে গেলেন যে তিনি ছেলেটির মাথায় আঘাত করে বসলেন এবং এইজন্যই আপনি গোকর্ণে গণপতির মূর্তির মাথায় একটা টোলও দেখতে পাবেন। রাবণের আর শক্তি ছিল না যে কৈলাসে হেঁটে ফিরে যায় এবং আবার তার কাজ শুরু করে; তাই তিনি গভীর বিষন্নতা আর ক্রোধ নিয়েই শ্রীলংকা অভিমুখে হাঁটতে লাগলেন।
আপনি ভালো বা মন্দ নির্বিশেষে, আপনি যদি ইচ্ছুক হন দৈবকৃপা সর্বদাই সকলের পক্ষে লাভ করা সম্ভব। কিন্তু সেটা আপনি নিজের জন্য অভিশাপ না কি আশীর্বাদ করে তুলবেন সেটা নির্ভর করে আপনি আপনার অন্তঃস্থলে কি ধরনের প্রকৃতি বয়ে বেড়ান তার ওপর। আপনি যে রকমের মনোভাব এবং মানসিকতা আপনার মধ্যে বিকশিত করেন সেটাই নির্ধারণ করে আপনি কিভাবে অস্তিত্বের উপযোগ করবেন।
Editor’s Note: Get the latest updates from the Isha Blog. Twitter, facebook, rss or browser extensions, take your pick.